সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
Daily Nasa News

গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছে এম এ পাস চা ওয়ালা

নিজস্ব প্রতিবেদক,দৈনিক নাসা নিউজ।বাংলাদেশের এক সাধারণ চা বিক্রেতা থেকে দেশের আইকন হয়ে উঠা “এম এ পাস চা ওয়ালা” এবার যাচ্ছেন গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের পাতায় নিজের নাম লেখাতে।চায়ের কাপ হাতে শুরু করা তার ব্যতিক্রমী যাত্রা এখন ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বমঞ্চে।চলতি মাসে রাজধানীর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “এম এ পাস চা ওয়ালা’স গিনিস ওয়ার্ল্ড  রেকর্ড টি ফেস্টিভ্যাল ২০২৫ ইং”।আয়োজকরা জানায়, এক দিনে ৫০ হাজার+ চা পরিবেশন ও অংশগ্রহণকারীর রেকর্ড গড়াই এ উৎসবের প্রধান লক্ষ্য।এম এ পাস চা ওয়ালা বলেন “আমি বিশ্বাস করি, এক কাপ চা শুধু পানীয় নয় এটা মানুষের হৃদয়কে যুক্ত করার মাধ্যম। গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বাংলাদেশের নাম উঠুক, এটাই আমার স্বপ্ন।” আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের খ্যাতনামা শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা অংশ নেবেন এই মহোৎসবে।চা শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ বাংলাদেশের চা সংস্কৃতিকে বৈশ্বিক অঙ্গনে নতুনভাবে তুলে ধরবে। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের উদ্যোক্তা ও তরুণ সমাজের জন্য হবে এক অনন্য অনুপ্রেরণা।দেশজুড়ে এখন আলোচনা একটাই কবে ইতিহাস গড়বেন এম এ পাস চা ওয়ালা।যদি সবকিছু পরিকল্পনা মতো এগোয়, তবে অক্টোবর মাসেইগিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের পাতায় যুক্ত হবে বাংলাদেশের এই গর্বের নাম। “মাস্টার্স পাস একজন যুবক চায়ের দোকান দিবেন” শুনলেই অনেকে অবাক হয়ে ভ্রু কুঁচকেছেন।অনেকে বলেছিলেন ‘কফি শপ বা আধুনিক কোনো ক্যাফে হলে মানাতো,কিন্তু চায়ের দোকান?’ কিন্তু সেই সব সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রাহ্য করে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, সৎ উপার্জন ও আত্মসম্মানের কাছে সমাজের কথার কোনো মূল্য নেই।শিক্ষাজীবন থেকে সংগ্রামের পথচাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সহিদুল রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্স  সম্পন্ন করেন। ২০১৩ ইং সালে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য বহু চেষ্টা করেছেন। আবেদন করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে,কিন্তু কাঙ্ক্ষিত চাকরি জোটেনি।তবুও হাল ছাড়েননি।এক সময় তিনি ফ্রিজের দোকান খোলেন।কিছুটা সময় সেই ব্যবসা চালালেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।পরে ২০১৮ থেকে ২০২১ ইং সাল পর্যন্ত একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন।শিক্ষকতা করতে করতে আবারও স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি অনলাইন স্কুল গড়ে তোলার।সেই স্বপ্ন নিয়েই পথ চলছিল, কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবতার চাপে তা বেশিদূর এগোয়নি।নতুন স্বপ্নের নাম ‘এমএ পাস চাওয়ালা’এই দীর্ঘ সংগ্রামের পর সহিদুল নতুন সিদ্ধান্ত নেন। ভেবেচিন্তে ঠিক করেন চায়ের দোকান দেবেন।তবে এই সিদ্ধান্তও সহজ ছিল না।অনেকেই আপত্তি তোলেন।পরিবার থেকেও বলা হয়েছিল,যদি করতেই হয় তবে অন্তত ‘ক্যাফে’ জাতীয় কিছু করা হোক। কিন্তু সহিদুল নড়েননি।  অক্টোবরের শুরুতে রাজধানীর ভাটারা কেন্দ্রীয় মসজিদের কাছে যাত্রা শুরু করে ‘এমএ পাস চাওয়ালা’।দোকান ভাড়া করতে গিয়েও তাকে অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়।মালিকেরা যখনই জানতে পারতেন দোকানটি হবে চায়ের, তখনই ভাড়া দিতে অনীহা প্রকাশ করতেন।কেউ কেউ ফোনেই কথা বলা বন্ধ করে দিতেন। কিন্তু সহিদুলের জেদ আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন “এই নামের পেছনে দুটি কারণ আছে। প্রথমত, নাম শুনেই যেন সবাই আকৃষ্ট হয়। দ্বিতীয়ত, শিক্ষিত বেকার তরুণরা যেন অনুপ্রাণিত হয় এবং কোনো কাজকে ছোট না ভাবে।”সাজানো দোকান আর বিচিত্র স্বাদের চাসহিদুলের দোকান সাজানো হয়েছে বেশ যত্ন নিয়ে।তামার তৈরি আরবি কেতার কেটলি, নানা রকম চা তৈরির সরঞ্জাম, পরিপাটি আসবাব সব মিলিয়ে দোকানটি আলাদা আমেজ তৈরি করেছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীরা নিয়মিত ভিড় করছেন এখানে।চায়ের তালিকাও বেশ বৈচিত্র্যময়।ইরানি জাফরান চা, ইরানি দুধ চা, স্পেশাল মাসালা দুধ চা,গরুর দুধ চা এমন সব নতুন নাম ও স্বাদের চা মিলছে একেবারে কম দামে এম এ পাস চা ওয়ালার দোকানে।সাথে থাকছে মাংসের স্পেশাল শিঙাড়া।আরো আছে আইস টি,মকটেল,জুস,লাচ্ছি,মিল্ক শেক,ফ্রেঞ্চ ফ্রাই,মটু শর্মা,মটকা মিট বক্স।

গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে যাচ্ছে এম এ পাস চা ওয়ালা